পরেশ দেবনাথ, জেলা প্রতিনিধি , যশোর, দৈনিক সারা দুনিয়া।
যশোরে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি, বাস্তবতা ও করণীয় শীর্ষক আঞ্চলিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে । সংঘাত নয় , শান্তি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ি, প্রতিপাদ্যে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ এর মাল্টি-স্টেকহোলডার ইনিশিয়েটিভ ফর পিস অ্যান্ড স্ট্যাবিলিটি-(এমআইপিস) প্রকল্পের আওতায় ফরেইন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অফিস-এফসিডিওর অর্থায়নে ওই সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহঃস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর-২৫) দুপুরে আরআরএফ ট্রেনিং এন্ড রিসোর্স সেন্টারে যশোর অঞ্চলের প্যান সমন্বয়কারী অধ্যাপক মোঃ শফিকুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে ছিলেন, যশোর জেলার জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ আশেক হাসান, বিশেষ অতিথি ছিলেন, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আসিফ উদ্দীন।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন, যশোর জেলার ইমাম সমিতির সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন, বিশিষ্ট ইসলামিক চিন্তাবিদ মোঃ নাজমুল হুদা, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর মনিটরিং ইভালুয়েশন ও রিসার্স এন্ড নলেজ ম্যানেজমেন্ট অফিসার মোঃ সায়েদুল ইসলাম। সার্বিক ব্যাবস্থাপনায় ছিলেন ফিল্ড কোঅর্ডিনেটর মোঃ আশরাফুজ্জামান, একাউন্ট অফিসার অধিশ দাশ ও কুষ্টিয়া ওয়াইপিএজির সমন্বয়কারী সাদিক হাসান রহিদ ।
জাতীয় সঙ্গীত,পবিত্র কোরাআন তেলাওয়াত,পবিত্র গীতা পাঠ ও পবিত্র বাইবেল পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। সভাটি সঞ্চালনা করেন, এরিয়া কো-অর্ডিনেটর এস.এম রাজু জবেদ। সংলাপে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, যশোর অঞ্চলের প্যান-এর সমন্বয়কারী অধ্যাপক মোঃ শফিকুল ইসলাম। সংলাপের সার সংক্ষেপ ও করণীয় নির্ধারণ ও ঘোষনাপত্র বিষয়ে আলোচনা করেন, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশ এর যশোর অঞ্চলের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোঃ খোরশেদ আলম।
সংলাপ অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও সম্প্রাদায়ের মানুষের বসবাস। বাংলাদেশ একটি ধর্মীয় ও জাতীগত সম্প্রীতির দেশ। ধর্ম কখনও বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে না। কিন্ত বিপথগামী মানুষ ধর্মকে পুজি করে সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করে, যা থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। আমাদের ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। সেজন্য সকল ধর্মের ধর্মীয় নেতাদের বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে। গুজবে কান না দিয়ে সত্য তথ্য জানতে হবে। কেউ যেন গুজব বা উস্কানী না দেয় সেদিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে একটি অসম্প্রদায়িক শান্তি ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ বিনির্মানে কাজ করে যেতে হবে, গড়ে তুলতে হবে মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা যেখানে প্রত্যেক ধর্ম ও সংস্কৃতিক মানুষ নিরাপদ থাকবে। সংলাপে অংশগ্রহণকারীগণ ধর্মীয় শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং তা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন। সবশেষে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার্থে সর্বসম্মতিক্রমে ১১টি ঘোষণা সম্বলিত ঘোষণাপত্রে উপস্থিত সকল অংশগ্রহণকারীগণ স্বাক্ষর করেন। সংলাপে যশোর অঞ্চলের চারটি জেলার নয়টি উপজেলার বাঘারপাড়া, কেশবপুর, অভয়নগর, মণিরামপুর, কুষ্টিয়া সদর, ঝিনাইদহ সদর, গাঙনি, মেহেরপুর ও মুজিবনগর উপজেলার পিএফজি এবং ওয়াইপিএজি সদস্য, ইয়ুথ এনডিং হাঙ্গার-এর সদস্য, বিভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় নেতা, সাংবাদিক, সুশিল সমাজের প্রতিনিধিগণ ও দি হাঙ্গার প্রজেক্টের কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

